জাতীয়বরিশাল বিভাগশীর্ষ খবরসর্বশেষ

শহীদ লে: কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন এর পিরোজপুরের বাড়ী আগুনে পুড়ে ছাই

১৯৬৭ সালের আগরতলা মামলার ২নং আসামী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ লে: কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন এর পিরোজপুরের স্মৃতিবিজড়ীত বাড়ীটি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আজ শুক্রবার ভোরে পিরোজপুর সদর উপজেলার পশ্চিম ডুমরিতলা এলাকায় তার বাড়ি আগুনে পুড়ে ভস্মিভূত হয় বলে জানান পিরোজপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার আবু জাফর।
ভোরে আগুন লাগার পরে প্রায় ২ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে দমকল বাহিনীর সদস্যরা এ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে তখন আগুনে পুড়ে সব ছাই হয়ে যায়।
শহীদ লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেনের ছোট ভাই মাহামুদুর রহমান টুনু বলেন, ফজরের নামাজের পরে আমরা হাটতে বের হই। সে সময় রাস্তায় বসে খবর পাই বাড়িতে আগুন লেগেছে। পরে আমরা দমকল বাহিনীকে খবর দেই এবং স্থানীয়রা আগুন নেভাতে চেষ্টা করে। দমকল বাহিনীর সদস্যরা এসে অনেক চেষ্টা করে আগুন নেভায়। কিন্তু ততক্ষণে আগুনে সব পুড়ে গেছে। এ আগুনে পুড়ে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, “সব চেয়ে বড় কথা হচ্ছে শহীদ লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেনের জন্মস্থান এই বাড়িটি। এই বাড়িটিও পুড়ে গেলো। যেভাবেই পুড়–ুক আমি ছোট ভাই হিসেবে দাবি করি আমার এই ভাইটার স্মৃতি যেনো কোন দিন মলিন না হয়।”
স্থানীয় পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুহা. নজরুল ইসলাম শিকদার জানান, স্থানীয়ভাবে খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থানে আসি। এই শহীদ লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন এর স্মৃতি বিজরিত শতবর্ষী বাড়িটি যাতে আবারো সুন্দরভাবে পূর্ণনির্মান করা সহ একটি স্মৃতি যাদুঘর তৈরি করা হয় তার জন্য আমি সরকারের কাছে দাবী করছি।
পিরোজপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার আবু জাফর জানান, স্থানীয়রা আগুন লাগার খবর দিলে তারা ৩টি গাড়ির মাধ্যমে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। ঘরে কেউ না থাকায় হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুন লাগতে পারে। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত জানানো হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালের আগরতলা মামলার ২ নং আসামী লে: কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন কে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ভোরে ৩২ পাঞ্জাবের কর্নেল তাজ এর নেতৃত্বে পাকিস্তানি সেনারা তাঁর ৩৬ এলিফ্যান্ট রোডের বাসায় হামলা চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। তাঁর মৃত দেহ সামরিক জীপের পিছনে রশি দিয়ে বেঁেধ রাস্তা দিয়ে টেনে ঢাকা সেনা নিবাসে নেয়া হয়। তার প্রিয়জনেরা এখনো লাশের সন্ধান পায়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মত্যাগের অনন্য অবদানের জন্য ২০১২ সালে তাঁকে “স্বাধীনতা পদক” প্রদান করা হয়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *